অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস- গ্রন্থ প্রকাশনায় অনেকের মধ্যে জি এম আবুল কালাম আজাদের ভূমিকাঃ  একটি পর্যালোচনা

  অনক আলী হোসেন শাহিদী ২৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৮:১২:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ইতিহাস একটি জাতির অতীত জীবন ক্রমবিকাশের ধারাবাহিক রচনা। এ কারনেই ইতিহাসগ্রন্থ একটি জাতির সভ্যতার ধারাবাহিক কার্যক্রমের বর্ণনা। এ বর্ণনাকে যারা- তাদের সততা, নিষ্ঠা, ও আন্তরিকতার সাথে তুলে ধরেন- তারা ইতিহাসবিদ। এই ইতিহাসবিদেরা অপোষহীন মনোভাব নিয়ে যুগে যুগে সত্যকে জাগ্রত রেখেছেন নিরন্তর আলোকবর্তিকার মতো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতহাস গ্রন্থটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গঠিত বিশেষ রিভিউ কমিটির তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত হয়েছে। এ কমিটির ইতিবাচক ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৯ সালে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। ঐ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ছিলেন ফজলে কবির। এর আগে ২০১৩ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থ প্রকাশনার জন্য ছয় সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি, দশ সদস্যের সম্পাদনা কমিটি ও চার সদস্যের পাণ্ডুলিপি কমিটি গঠিত হয়েছিল।
‘‘ বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’’Ñ গ্রন্থটি প্রকাশনার জন্যে ২০১৮ সালে যে সাত সদস্যের রিভিউ কমিটি গঠিত হয়- সেই কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরে- বইটি প্রকাশনার উদ্যোগ নেন। যা ঐতিহাসিক ভাবে একটি বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই সাত সদস্যের রিভিউ কমিটিকে যিনি সার্বক্ষনিক শ্রমের মাধ্যমে তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও লেখার মাধ্যমে উৎসাহিত করেছেন- তিনি হচ্ছেন জি এম আবুল কালাম আজাদ। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন এন্ড পাবলিকেশনস্ এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থের রিভিউ কমিটিতে ছিলেন- এস এম মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক নাসরিন আহমেদ, জি এম আবুল কালাম আজাদ, মোঃ নেছার আহমেদ ভূঁঞা, রিজভী নেওয়াজ নাজমুল হোসেন ও রিপন রায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদ- এই কমিটির একজন সদস্য হলেও পুরো বইটির ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ অংশের লেখা তৈরী, সম্পাদনা, প্রয়োজনীয় সংশোধন সংযোজন, ও বিয়োজনে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে- হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে- তৎকালীন তথা আজকের বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ঐতিহাসিক সর্ম্পক, বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম করণ ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ও স্বভাবসূলভ ভাবনাগুলো ঐতিহাসিক ভাবে তুলে ধরতে তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। সাত সদস্যের পুরো রিভিউ কমিটিসহ – এই প্রকাশনার সাথে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত তাদের সকলকে তিনি এক ছাতার মধ্যে এনে বইটি সাবলীলভাবে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়ে- এবং উদ্যোগকে বাস্তবে রূপ দিয়ে – দেশ ও বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। এই তথ্য আমরা জানতে পেরেছি- বইটি প্রকাশনার পেছনের মানুষদের চিহ্নিত করার অনুসন্ধানী কার্যক্রম চালিয়ে। এই কমিটিকে-তথা- এ প্রকাশনা কার্যক্রমকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গর্ভনর ফজলে কবীর। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস প্রন্থটি ৩৪৩ পাতার মধ্যে প্রকাশিত। বইটির -‘‘মুখবন্ধ’’- পর্বের পরে – সূচিপত্রে স্থান পেয়েছে ০১। বাংলাদেশ ব্যাংক ঃ সূচনাপর্ব ০২। স্বাধীন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ব্যাংক ০৩। অর্থনীতি ও ব্যাংক ব্যবস্থার পূনগঠন (১৯৭২-৭৫) ০৪। বাজারমূখী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রবর্তন (১৯৭৬-১৯৮৯) ০৫। আর্থিক খাত সংস্কারের উদ্যোগ- (১৯৯০-২০০০) ০৬। আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনা সুদূঢকরণ (২০০১-২০০৮) ০৭। ডিজিটাইজেশন ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের পথে যাত্রা (২০০৯-২০১৭) ০৮। দেশের আর্থ-সমাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ সমূহ ০৯। আলোকচিত্র ও পরিশিষ্ঠ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থের এ সব শিরোনামে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস, কার্যক্রম, কাজের পরিধি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অব্যাহত সাফল্যের ধারাবাহিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি শিরোনামই একটি অর্থবহ ঘটনা ইতিহাস ও তথ্যচিত্রকে ধারন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস- গ্রন্থটি প্রকাশনার ক্ষেত্রে কিছু কিছু রচনা শৈলীর পেছনে ব্যাংকটির বর্তমান নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদের একটি অর্থবহ ও ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। যা বইটি একটি অন্যতম ইতিহাস গ্রন্থের মর্যাদা দিয়েছে। একই সাথে একটি সত্যনিষ্ঠ ইতিহাস পাঠকের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। যে কয়টি বিষয় অতীত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে- তা সংক্ষেপে উপস্থান করছি।
বাংলদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থটির মূখবন্ধের প্রথমেই বলা হয়েছে- ‘‘সৃষ্টিলগ্ন থেকে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর ক্রমবিবর্তন ও সভ্যতার চালচিত্রের রেকর্ড লিপিবদ্ধকরণ ও সংরক্ষনই হলে ইতিহাস। স্বাধীন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস সম্পর্কে দুটি কথা বলার পূর্বেই সর্বাগ্রে গভীর শ্রদ্ধাভাবে আমি স্মরণ করতে চাই যাঁকে তিনি আর কেউ নন- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’’ মূখবন্ধে আরো বলা হয়েছে।-‘‘ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম- ষ্টেট ব্যাংক অব পাকিস্থানের আদলে ‘‘স্টেট ব্যাংক অব বাংলাদেশ’’ এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এর আদলে- ‘‘ব্যাংক অব বাংলাদেশ’’- নাম করনের প্রস্থাব ছিল। কিন্তু সুগভীর বাঙালী চেতনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিদেশী ভাষায় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নামকরণ না করায় অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নামে কোনো বিদেশী ভাষারীতি অনুসরণ করা হবে না বা কোনো বিদেশী ব্যাংকের অনুকরনে এর নাম রাখা যাবেনা বলে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম হয় ‘‘ বাংলাদেশ ব্যাংক’’। ভাষার নামে দেশ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এই অকৃত্রিম স্বদেশি ভাষার ভাবধারায় একমাত্র রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’’। মুখবন্ধটি তৎকালীন গর্ভনর ফজলে করীর এর নামে প্রকাশিত হয়। মূখবন্ধটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবৃত্ত সাবলীল ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। যার পেছনে রিভিউ কমিটির সদস্যদের ইতিবাচক ভূমিকা ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস-‘‘ এ ঐতিহাসিক গ্রন্থের সূচনা পর্বটি অভ্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের নামকরণ- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাথে ব্যাংকটির ঐতিহাসিক সর্ম্পক ইতিবাচক ভাবে ফুটে উঠেছে। এ সূচনা পর্বের মধ্যে রয়েছে- ‘‘ ব্যাংক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঃ সূত্রপাত ও ইতিহাস’’ – এ পর্বটি এ দেশের একটি ঐতিহাসিক অর্থনীতির ধারাবাহিক স্বাক্ষ্য বহন করে । এ পর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্রিটিশ আমলে বাংলার ব্যাংক ব্যবস্থা, উপমহাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্থান, পূর্ব পাকিস্থানের ব্যাংক ব্যবস্থা, এ ক্ষেত্রে ভারত বিভাজন পরবর্তী অবস্থা, বাঙালী ব্যাংক উদ্যোক্তা, পূর্ব পাকিস্থানের ব্যাংক সমূহ, পূর্ব পাকিস্থানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং স্বাধীনতা ব্যাংক ব্যবস্থার বৈষম্য- এসব বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক চিত্র ও আমাদের অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ‘‘ এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ও মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো- নিবন্ধতে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মীদের ইতিবাচক ভূমিকার ইতিহাস চিত্রিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থটিতে- স্বাধীন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ব্যাংক- পর্বটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্বে ‘‘ বাংলাদেশ ব্যাংক’’- নামের প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস চিত্রিত হয়েছে। এছাড়া অর্থনীতি ও ব্যাংক ব্যবস্থার পূর্নঃগঠন (১৯৭২-১৯৭৫) বাজারমূখী বাংকিং ব্যবস্থার প্রবর্তন (১৯৭৬-১৯৮৯), আর্থিক খাত সংস্কারের উদ্যোগ- (১৯৯০-২০০০), আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনা সুদূঢকরন (২০০১-২০০৮), ডিজিটাইজেশন ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের পথে যাত্রা (২০০৯-২০১৭), ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ সমূহ- পর্বটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। এ পর্বে বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নত একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক ভূমিকার কথা বলা হয়েছে বহুবিধ উন্নয়নমূখী প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে। একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানে জানা গেছে- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে- প্রকাশিত ‘‘ বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতহাস’’- গ্রন্থটি নানা কারণে সমুদ্ধ হয়েছে। ব্যাংকটির প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের- কর্মজীবনের প্রকৃতি ইতিহাস চিত্রিত হয়েছে। যা একশ্রেনীর মানুষ অশুভ ষড়যন্ত্রে এতদিন অনেকটা আড়ালে রাখার অপচেষ্টা করা হয়েছিল।
নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদের ইতিবাচক তত্ত্বাবধান ও আপোষহীন কর্মতৎপরতার মাধ্যমে ‘‘ বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’’- গ্রন্থের বাংলাদেশ ব্যাংকের সূচনা পর্ব, স্বাধীন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনীতি ও ব্যাংক ব্যবস্থার পূনর্গঠন (১৯৭২-৭৫) ও ডিজিটাইজেশন ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন পথের যাত্র ( ২০০৯-২০১৭) পর্বটি বর্তমান দেশ প্রেমিক সরকারের কর্ম-তৎপরতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে সমুদ্ধ করার চিত্র ফুটে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থে ফুটে উঠেছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘‘ এ দেশের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হিসেবে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের পৃথক পৃথক শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও প্রকৃতি, কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা, মুদ্রা ও অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা, রাজস্বকর ও শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা বৈদেশিক বানিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা, আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা- এ ৬ দফা দাবী আজীবনের শোষিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত বাঙালীর কাছে ‘‘ বাঙালির মুক্তির সনদ’’ হিসেবে পরিনত হয়। এই ৬ দফা আন্দোলনের পথ ধরেই- পূর্ববাংলার অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠে। যার ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়। পরবর্তী ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় অর্জনের মাধ্যমে এ দেশে কেন্দ্রীয় বাংকের প্রতিষ্ঠা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস- গ্রন্থে এই ঐতিহাসিক সত্যটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থে ডিজিটাইজেশন ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের পথে যাত্রা (২০০৯-২০১৭) পর্বটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ এর রূপকার প্রজ্ঞাময় দূরদর্শী নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত তাঁর বিজ্ঞ আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়- এর কৌশল ও পরামর্শে বিগত বছরগুলিতে দেশে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তির সুফল পৌছে দেওয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ডিজিটাইজেশন এর আওতায় এনে আন্তঃশাখা নেটওয়াকিং, এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং (ইআরপি), ব্যাংকিং এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার, এন্টারপ্রাইজ ডাটা ওয়ারহাউজ, ওয়েবসাইট উন্নয়ন, ইন্টারনেট উন্নয়ন, ওপেন ডাটা ইনিশিয়েটিভ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব সফটওয়্যার, ই-টেন্ডারিং, ই-রিক্রুটমেন্ট- ই-লাইব্রেরী, ই-নিউজ ক্লিপিং, ই-এক্সপি অনলাইন মনিটরিং সি্েটম, রপ্তানী আমদানী মনিটরিং, টি এম ফরম ও ইনওয়ার্ড রেমিট্যান্স মনিটরিং, বৈদেশিক মুদ্রা বাজার মনিটরিং সিস্টেম, প্রাইজবন্ড ও সঞ্চয়পত্র সিস্টেম, মেডিকেল ইনফরমেশন সিস্টেম, অনলাইনে ট্রেজারী বিল ও বন্ডের সেকেন্ডারী ট্রেডিং, ইলেকট্রিক ড্যাসবোর্ড, বৃহৎ ঋণ মনিটরিং সফটওয়্যার, আইট ল্যাব, আইটি ল্যাব স্থাপন, তথ্য প্রযুক্তিগত উন্নয়নে স্বীকৃতি, ব্যাংকিং খাত ডিজিটাইজেশন, অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা, ই-কমার্স ও এম কমার্স, অনলাইন সি আই বি সেবা, পেমেন্ট সিস্টেমস ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওর্য়াক, ন্যাশনাল পেমেন্ট স্যুইচ, বাংলাদেশ, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, আর টি জি এস, অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে, আর্থিক অন্তভূক্তিকরন কর্মসূচী, নূন্যতম জমায় ব্যাংক হিসাব খেলা, স্কুল ব্যাংকিংসহ নানা তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম সর্ম্পকে দেশবাসী একটি বিশেষ ধারণা পেয়েছে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অনন্য সফলতা। এই সফলতার পেছনে যিনি ছায়ার মতো কাজ করেছেন- তিনি ব্যাংকটির অন্যতম নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদ। এ বইটিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন এদেশের একঝাঁক গুনীজন। যারা ব্যাংকিং ক্ষেত্রসহ দেশে প্রেমের নানা ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রেখেছেন।
দৈনিক সমাজ সংবাদ- তাদের নিজস্ব উদ্যেগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস- গ্রন্থটি প্রকাশনার পেছনে- বিশেষ করে ২০১৮ সালে গঠিত রিভিউ কমিটির মধ্যে যারা দেশে প্রেমের স্বাক্ষর রেখে বইটি প্রকাশনায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন- তাদের জীবন ও কর্ম অনুসন্ধান করেছি- দেশকে জানানোর অঙ্গীকার নিয়ে। এই রিভিউ কমিটির অন্যতম ব্যক্তিত্বই হচ্ছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদ।
আমরা নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদ এর জীবন ও কর্ম-অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তথ্য সুত্র থেকে জানা যায়Ñ জি এম আবুল কালাম আজাদ ১৯৯২ সালের ২৪ মার্চ সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাাদেশ ব্যাংকে যোগদানের মাধ্যমে কর্ম-জীবন শরু করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন পদে অত্যান্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০২২ সালের ৮ জুন নির্বাহী নির্বাহী পরিচালক হিসেব পদোন্নতি পান। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশনস এন্ড- পাবলিকেশনস এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জি এম আবুল কালাম আজাদ ব্যক্তিগত জীবনে একজন দক্ষ চিন্তাশীল ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে বিশেষ আস্থা অর্জনে সক্ষমে হয়েছেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ প্রেমের আদর্শে উজ্জীবিত। তার যখন ৭ বছর বয়স সেই সময় থেকেই তিনি জাতির জনক শেখ মুজিবকে তার অন্তরে ধারন ও লালন করে আসছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা- তাকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস- গ্রন্থটিতে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে তার ঐতিহাসিক স্বাক্ষর রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তার ভাবনাটা অনেকটা এমনÑ‘‘দেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে যত কথা, যত সুবচন হয়ে গেছে- সে দৌড়ে আমি শিশু। তবে বাঙালীর স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তি জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মহান সৃষ্টিকর্তার এক অপার দান। তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। জীবনের এ লগ্নে এ মহান নেতার আদর্শের সৈনিক জাতীয় স্বার্থে কাজ করবে, ব্যক্তি স্বার্থে নয়’’।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই দেশপ্রেমিক কর্মর্তার আগামী দিনের পথ চলা হোক- একটি ‘‘র্স্মাট বাংলাদেশ’’- গড়ার নতুন প্রত্যয়, নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশা- এ প্রার্থনা আমাদের সকলের।

আরও খবর

Sponsered content

আরও খবর: অর্থনীতি

সিটির সঙ্গে একীভূত না করতে গভর্নরকে বেসিকের কর্মীদের স্মারকলিপি

ওসিডিএল এর নেতৃত্বে- নিরাপদ ও লাভজনক আবাসনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমিন সিটি পূর্বাচলের পথচলা শুরু হয়েছে

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে খেললে সরাসরি কারাগারে পাঠানো হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব এর দৃষ্টি আকর্ষণ : চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক-এর নাম প্রস্তাবে ব্যাপক অনিয়ম

এশিয়ান ক্যান্সার ইনস্টিটিউট বিডি প্রাইভেট লিমিটেড এবার কাজ করছেন মরণব্যাধি ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে

রিহ্যাব এর বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২০ || আবাসন ব্যবসায়ীদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছি – আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট