অর্থনীতি

পর্যটন শিল্প: আমাদের জীবনে আত্মার প্রশান্তিকে নিশ্চিত করতে পারে : পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন

  প্রতিনিধি ১৩ মে ২০২৩ , ৮:২০:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

বিশেষ সংবাদদাতা: দেশের স্বনামধন্য পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন বলেছেন- “পৃথিবীর সকল শিল্পের মধ্যে পর্যটন শিল্প অন্যতম। পর্যটন শিল্প ব্যক্তিজীবনের মৌলিক চাহিদার সাথে জড়িয়ে আছে। জীবন এক সংগ্রামী সত্ত্বা। এ সংগ্রামী সত্ত্বাকে সতেজ করে থাকে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ভ্রমন। এ ভ্রমনকে জ্ঞানগর্ভ ও আনন্দঘন করে তোলে পর্যটন শিল্প। এ পর্যটন শিল্প আমাদের আত্মার প্রশান্তিকে নিশ্চিত করে পারে।” দেশের শীর্ষ পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীনের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেছিলেন। আমরা তার সাথে পর্যটন শিল্পের মৌলিক গুরুত্বসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। তিনি বলেন- “পৃথিবীতে এমন কোন শিল্প নেই- যা পর্যটন শিল্পের আওতাভূক্ত নয়। সব কিছু এ শিল্পের অর্ন্তভূক্ত। পর্যটন শিল্পের পরিতি ব্যাপক। পর্যটন শিল্প মূলত এমন একটি সেবা- যা মানুষের মৌলিক প্রশান্তিকে নিশ্চিত করে থাকে। কিছু সময়ের জন্য জীবনের চলমান গতি থেকে এক ভিন্ন জগতে প্রবেশের মাধ্যমে আত্মাকে প্রশান্তি দিতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন একটি নির্মল পরিবেশ।”

পর্যটন শিল্পের গভীরতা অনুধাবন করতে গিয়ে পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন বলেন- “পর্যটন হচ্ছে- যখন একজন ভ্রমন পিপাসু মানুষ তার নিজের প্রতিদিনের আবাসস্থল ছেড়ে অন্য জায়গায় ভ্রমন ও বিনোদনের উদ্দেশ্যে বের হয়, সেখানে এক দিনের বেশী এবং এক বছরের কম অবস্থান করে এবং কোন ধরনের আর্থিক অর্জনের সাথে যুক্ত থাকে না, শুধুমাত্র বিশ্রাম ও মানসিক প্রশান্তির জন্য অবস্থানের কাজকে পর্যটন বলা যেতে পারে।” এ কারনে পর্যটন বলতে নির্মল প্রশান্তিময় পরিবেশে কিছু সময় বা দিনের জন্য নিজেকে প্রানের আনন্দে হারিয়ে ফেলাকেও পর্যটন বলা যেতে পারে।” তিনি বলেন- “মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পরে মূলত পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। পর্যটন শিল্প- এ দেশে আজ এক অনন্য শিল্পের নাম। বিগত ৫০ বছরে আমাদের এ পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সরকারী পর্যায়ের বাইরে বেসরকারী পর্যায়ে অনেক উদ্যোক্তা এ দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে এগিয়ে এসেছে। এ উন্নয়ন অব্যাহত আছে।”

পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন বলেন- “এ দেশের পর্যটন এলাকার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আমাদের সামুদ্রিক এলাকা। বিশে^র অন্যতম সমুদ্র সৈকতের মধ্যে এ দেশের কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত অন্যতম। এ সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে অনেক ধরনের তারকা হোটেল ও রিসোর্ট। কিন্তু মানসম্মত হোটেল তথা পাঁচ তারকা খচিত হোটেল এর ব্যাপক চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।” তিনি বলেন- “পর্যটন সেবা যতটা আন্তরিক হবে- এ প্রসার ততটাই বাড়বে। আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা হোটেল নির্মানে অনেক উদ্যোগী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে অন্যতম গোল্ডস্যান্ডস গ্রুপ।” এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- “কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় পর্যটন শিল্পের সবচেয়ে জনপ্রিয় গোল্ডস্যান্ডস গ্রুপ দুটি পাঁচ তারকা মানের হোটেল নির্মান করছেন। আন্তর্জাতিক মানের এ হোটেল নির্মানে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে হোটেল মালিকানা নিশ্চিত করছেন- সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে। যে কেউ তার নিজস্ব অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে এ ধরনের একটি পাঁচ তারকা হোটেলের একটি স্যুটের মালিক হতে পারেন। এ মালিকানা ক্রেতা তার সারা জীবন বংশানুক্রমে ভোগ করতে পারবেন। এ মালিকানা অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তির মতো উচ্চমূল্যে বিক্রয় ও হস্তান্তর করতে পারবেন। ভোগ করতে পারবেন এর নিয়মিতি আয়।” তিনি বলেন- এ ধরনের উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান- কারন এতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগন সম্মিলিতভাবে বিনিয়োগ করে দেশে একটি অর্থনৈতিক সম্পদ সৃষ্টি করতে পারেন। এ ধরনের উদ্যোগে অংশ নিতে তিনি দেশের সর্বশ্রেণীর উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।”

পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন দেশের শীর্ষ পর্যটক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম। তিনি মনে করেন- আমাদের সোনার ছেলেরা বিশে^র বিভিন্ন দেশে তাদের আন্তরিক শ্রম বিনিয়োগ করে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রেরন করছে। তাদের কষ্টার্জিত আয় এ দেশের পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ করে একটি পাঁচ তারকা হোটেল স্যুটের মালিক হতে পারেন। এ খাতে বিনিয়োগ করে তিনি লাভবান হতে পারেন। কারন পর্যটন শিল্প- বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি সম্ভাবনাময় খাত। এ দেশের এই পর্যটন শিল্পকে আমরা যদি সুশৃঙ্কল ও নিরাপত্তার বেষ্টুনীতে গড়তে পারি তাহলে বিদেশী পর্যটকরা ব্যাপক ভাবে আকৃষ্ট হবে এবং দেশীয় পর্যটকরাও বিদেশে নয় দেশেই তারা নিরাপদ ও আনন্দঘন অবকাশ যাপনের জন্য উৎসাহিত হবে। নিরাপদ ও আনন্দঘন অবকাশ যাপন আত্মার প্রশান্তিকে জাগ্রত করে। এ কারনে মানুষের মৌলিক, মানবিক ও আত্মিক চাহিদা পূরনে পর্যটন উদ্যোক্তাদের আরো আন্তরিক হতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি মনে করেন- গোল্ডস স্যান্ডস্ গ্রুপ কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় পাঁচ তারকা হোটেল নির্মানের ক্ষেত্রে সেই ধারা অব্যাহত রাখছেন। তিনি বিশ^াস করেন- এই খাতের বিনিয়োগ করলে উদ্যোক্তাগন সম্মিলিতভাবে লাভবান হবেন।”

পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন যখন গোল্ডস স্যান্ডস্ গ্রুপ এর হোটেল নির্মানের কথা বলছিলেন- তখন তার নিকট আমরা জানতে চেয়েছিলাম- পাঁচ তারকা হোটেল আমরা কিভাবে চিহিৃত করবো? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- “যে সকল হোটেল সমূহে ২০০টির অধিক আধুনিক মানের অ্যামিনিটিস সংবলিত সুসজ্জিত এসি, ডবল ও টুইন রুম (কিং সাইজ বেড), পাঁচ থেকে দশটিট প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট, পর্যাপ্ত স্যুইট রুম ও ডিলাক্স রুম, ২-৩টি সুইমিং পুল, ৩-৪ প্রকারের আধুনিকমানের রেষ্টুরেন্ট, কফি সপ, ৩টি বার, জিম, স্পা, সেলুন, স্যুভেনির সপ, বিজনেস সেন্টার, বল রুম, ৪-৫টি সেমিনার কনফারেন্স রুম, সার্বক্ষনিক ডাক্তার ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র থাকে এবং সর্বোপরি ২৪ ঘন্টা কুইক গেষ্ট সার্ভিস প্রদান করা হয়ে থাকে, সেগুলোকে বলা হয় পাঁচ তারকা হোটেল।” তিনি এ প্রসঙ্গে আরো বলেন- গোল্ডস স্যান্ডস্্ গ্রুপ তাদের এই পাঁচ হোটেল নির্মানের ক্ষেত্রে সকল চাহিদা পূরন করবে। ফলে এই খাতে বিনিয়োগ হবে টেকসই ও লাভজনক।”

তিনি এ দেশের যুব সমাজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন- “বর্তমান বিশে^ পর্যটন শিল্পের সাথে যুব সমাজের অংশ গ্রহন সবচেয়ে বেশী। পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহনও বেড়েছে। পর্যটন শিল্প হচ্ছে- কিছু সময়ের অবকাশ যাপনের লক্ষ্যে সুন্দর ও মনোরম সেবা।” যেখানের সকল বয়সী মানুষ তাদের কাঙ্খিত সেবা দিতে ও গ্রহন করতে পারে। যেহেতু পর্যটন সেবা মানুষের আত্মিক ও মানসিক সেবা নিশ্চিত করে- সেহেতু এই সেবা পৃথিবীর মানব সভ্যতা যতদিন টিকে থাকবে- পর্যটন শিল্পও ততদিন টিকে থাকবে। পৃথিবী থেকে অনেক শিল্প হারিয়ে যাবে, কিন্তু পর্যটন শিল্প টিকে থাকবে। এর জন্য প্রয়োজন সকলের অংশগ্রহনে সমন্বিত প্রচেষ্টা। এ সেবা বিনিয়োগ টেকসই ও লাভজনক। এ সেবা খাতে যুব সমাজ যত বিনিয়োগ করবে- দেশের ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনের অর্থনীতি ততটাই টেকসই হবে।

পরিশেষে পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন বলেন- “আমাদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের আত্মার প্রশান্তির জন্য- পর্যটন শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করি গোল্ডস স্যান্ডস্ গ্রুপে অর্থবহ বিনিয়োগের মাধ্যমে।

পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীনের এ মতামতকে আপনি কিভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিনিয়র বিশিষ্ট সাংবাদিক এসএম হোসেন বাবলা বলেন- এ দেশের পর্যটন শিল্পকে নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষনা করছেন পর্যটন বিশেষজ্ঞ মোঃ নুরুল আমীন। তার এ ভাবনা পর্যটন খাতে আমাদের টেকসই অর্থনীতিকে আরো সমৃদ্ধ করবে। এ ক্ষেত্রে তার ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সমাজের সংশ্লিষ্ট সকলের ইতিবাচক সহযোগিতা কামনা করছি।”

আরও খবর

Sponsered content

আরও খবর: অর্থনীতি

সিটির সঙ্গে একীভূত না করতে গভর্নরকে বেসিকের কর্মীদের স্মারকলিপি

ওসিডিএল এর নেতৃত্বে- নিরাপদ ও লাভজনক আবাসনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমিন সিটি পূর্বাচলের পথচলা শুরু হয়েছে

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে খেললে সরাসরি কারাগারে পাঠানো হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব এর দৃষ্টি আকর্ষণ : চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক-এর নাম প্রস্তাবে ব্যাপক অনিয়ম

এশিয়ান ক্যান্সার ইনস্টিটিউট বিডি প্রাইভেট লিমিটেড এবার কাজ করছেন মরণব্যাধি ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে

রিহ্যাব এর বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২০ || আবাসন ব্যবসায়ীদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছি – আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট