অর্থনীতি

ঢাকা কাফরুল থানার আলোচিত মানিলন্ডারিং মামলা উপযুক্ত দালিলিক তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া নিরাপরাধ ব্যক্তিদের অভিযুক্ত না করার দাবী জানিয়েছে- ভূক্তভোগীসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরা

  অনক আলী হোসেন শাহিদী ২১ জুন ২০২৩ , ১১:৩৭:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকার কাফরুল থানার দায়েরকৃত বহুল আলোচিত প্রায় ২০০০ কোটি টাকা পাঁচার সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং এর

অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন সিআইডির ঢাকা মেট্রো- বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক এসএম মিরাজ আল মাহমুদ। গত ২০২০ সালের ২৬শে জুলাই কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। উক্ত মামলা নং-২৪। অনুসন্ধানে জানা যায়- ঐ মামলাটির এজাহারভূক্ত আসামী তদানীন্তন ফরিদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন

সম্পাদক মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।

মামলাটি তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি ঢাকা মেট্রো- পশ্চিম এর সহকারী পুলিশ

সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস। অভিযোগপত্র নং- ৫৮ তাংঃ ০২-০৩-২০২১ ইং ঐ অভিযোগপত্রে মোঃ সাজ্জাদ

হোসেন বরকত, নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, আশিকুর রহমান ফারহানসহ মোট ১০ জনকে অভিযুক্ত করে

আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। উল্লেখ্য যে, উক্ত মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক

জবানবন্দি দিয়েছিলেন মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত, মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, নিশান মাহমুদ শামীম, মোঃ

বিল্লাল হোসেন, খন্দকার নাজমুল ইসলাম লোভী, আশিকুর রহমান ফারহান। ঐ মামলায় উপযুক্ত তথ্য প্রমান

না পাওয়ায় মোঃ বিল্লাল হোসেন ও নিশান মাহমুদ শামীমকে অভিযোগের দায় হতে অব্যহতি দেয়া হয়। এই মর্মে আপত্তি জানায় যারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে- তাদের কেন অভিযোগের দায় হতে

অব্যহতি দেয়া হলো? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বিচারিক আদালত কর্তৃক মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশনা

দেয়া হয়। উল্লেখ যে, মামলার অভিযুক্ত আসামী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত, মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, আশিকুর রহমান ফারহান, নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেতী, এবং অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া আসামী মোঃ নিশান মাহমুদ শামীম ও মোঃ বিল্লাল হোসেন- যথাযথ আইনী ১৬৪ ধারার আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে ১৬৪

ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার করেন। তারা বলেন- সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা তাদেরকে

নানা রকম ভয় দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারকের সম্মুখে ঐ জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেন। মামলাটি বর্তমানে

তদন্ত করছেন- সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান।

মামলাটির এজাহারভূক্ত আসামী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। আদালতে ১৬৪

ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তাদের সাথে এ মামলা জড়িত রয়েছে মর্মে দাবী করে ৩৫ জন

ব্যক্তির নাম বলেছে। এদের মধ্যে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, আইনজীবি, ও বিশিষ্ট

ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। মানিলন্ডারিং মামলায় আসামীদের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের কিভাবে চিহ্নিত করা হয় তা

নিয়ে কথা বলেছি- বিজ্ঞ আইনজীবি, সিআইডির মুখপত্র ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল

ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রধান কর্মকর্তা মোঃ মাছুদ বিশ্বাসের সাথে। এসব অভিজ্ঞ

ব্যক্তিবর্গ মনে করেন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও সংশোধিত আইন-২০১৫ এর ২৫ ধারা ও একই

সাথে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এর সকল ধারা ও উপধারায় বলা হয়েছে- কি কি অপরাধ করলে

কোন ব্যক্তিকে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত করা যাবে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র মানিলন্ডারিং অপরাধের সাথে

যুক্ত উপযুক্ত তথ্য প্রমান ও দালিলিক প্রমান ব্যতিত এ আইনে কাউকে অভিযুক্ত করা যায় না। একজন

এজাহারভূক্ত আগামী ১৬৪ ধারায় দেয়া তার জাবানবন্দীতে

 

যাদেরকেই অভিযুক্ত দাবী করে নাম বলবে- তার বিপরীতে উপযুক্ত তথ্য ও দালিলিক প্রমান না থাকলে তাকে

অভিযুক্ত করার আইনী সুযোগ নেই। ঢাকার কাফরুল থানার দায়েরকৃত আলোচিত এ মামলার এজাহারভূক্ত

আসামী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল কর্তৃক আদলতে দেয়া ১৬৪ ধারায় যেসব

ব্যক্তিবর্গের না বলেছে- তাদের অনেকের সাথেই আমি কথা বলেছি। তারা নিজেদের সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবী করে

আদালতের নিকট ন্যায় বিচারকের দাবী জানিয়েছেন। যাদের সাথে কথা বলেছি- তাদের পেশা, রাজনৈতিক ও

সামাজিক পরিচয় একই সাথে কেন তারা নিজেদের নির্দোষ দাবী করছেন। এরা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের

কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল ঘোষ, আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা সাহেব সরোয়ার, বিশিষ্ট আইনজীবি জেলা আওয়ামী

লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ জাহিদ বেপারী, ফরিদপুর ভাংগা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-

সভাপতি দীপক মজুমদার, ফরিদপুর সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ শামসুল আলম

চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অনিমেষ রায়, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খন্দকার শাহীন

আহমেদ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফরিদপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ

সিদ্দিকুর রহমান। ০১। বিপুল ঘোষ: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ বলেন-“

আমি দীর্ঘ ৫৪ বছর যাবৎ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। মানিলন্ডারিং করার মতো কোন

ব্যবসা বাণিজ্য আমার

নেই। দলের স্বার্থে ৭১ বার জেল খেটেছি। ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যে

১৬৪ ধারায় আমার নাম বলা হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার নিকট নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী

জানাচ্ছি।” ০২। সাহেব সরোয়ার। সাহেব সরোয়ার ফরিদপুর আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী নেতা। ১৯৮১ সালে

তিনি ছাত্রলীগের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি ২০০৪ সালে ফরিদপুর

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। তিনি ৪৪ বছর যাবৎ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির

সাথে যুক্ত। ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ফরিদপুর

চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাট্রির পরিচালকসহ বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত।

তিনি বলেন- “আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে যুক্ত। অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক

প্রতিহিংসার কারনে অসৎ উদ্দেশ্যে ১৬৪ ধারায় আমার নাম বলা হয়েছে। আমি কোন প্রকার মানি লন্ডারিং

অপরাধের সাথে যুক্ত নই। "

০৩। এ্যাডভোকেট মোঃ জাহিদ বেপারী: ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ও

ফরিদপুর জেলা বার এসোসিয়েশনের সাধা রন সম্পাদক জাহিদ বেপারী। ১৯৯৫ সাল থেকে ফরিদপুর সরকারী

রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে সজিনাভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের

সাথে যুক্ত। তিনি বর্তমানে সহকারী আইন কর্মকর্তা (এপিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৭ সাল

থেকে আইন পেশার সাথে যুক্ত। তিনি বলেন- “তিনি কোন ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে যুক্ত নন। সততার সাথে আইন

পেশার সঙ্গে যুক্ত। তিনি কখনও কোন ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং অপরাধের সাথে যুক্ত নন। এজাহারভূক্ত

আসামীরা সম্পূর্ণ কৌশল উদ্দেশ্যে মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রভাহিত করতে আমার নাম বলেছে। আমি নিরপেক্ষ

ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।"

০৪। দীপক মজুমদার: ফরিদপুরের ভাংগা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি দীপক মজুমদার বলেন- “তিনি একজন ঔষধ ব্যবসায়ী। ২০২০ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী তার মালিকানাধীন মজুমদার ড্রাগস হাউজ এ এসে মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল সহ ৮ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করলে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় তার ম্যানেজার মানিক চক্রবর্তী একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং- ৭ তাং: ০৬-০৭-২০২০

ইং । মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন আছে। আলোচিত মানি লন্ডারিং মামলার এজাহারভূক্ত আসামী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল সম্পূর্ণ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া  জবানবন্দিতে আমার নাম বলেছে। আমি মানি লন্ডারিং কোন প্রকার অপরাধের সাথে যুক্ত নই। আমি নিরপেক্ষ

ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।”

০৫। মোঃ শামছুল আলম চৌধুরী: ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও বিশিষ্ট

ব্যবসায়ী শামছুল আলম চৌধুরী বলেন-“ঢাকার কাফরুল থানায় দায়েরকৃত মানিলন্ডারিং মামলার এজাহারভূক্ত

আসামী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল গং দের বিরুদ্ধে বিগত ২০২০ সালের

১২জুন ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী তৎপরতার মামলা দায়ের করি । মামলা নং- ৩০ তাং: ১২-০৬-২০২০ইং। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। ঐ আসামীদ্বয় সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে

প্রতিপক্ষকে হয়রানী করতে আমি মানিলন্ডারিং অপরাধে যুক্ত মর্মে আদালতে ১৬৪ ধারায়

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উক্ত আসামীদের সাথে আমার কোন প্রকার

যৌথ ব্যবসা বা আর্থিক সম্পর্ক নেই। এছাড়া আমি মানিলন্ডারিং এর মতো কোন অপরাধের সাথে যুক্ত নই।

আমি এ বিষয়ে নিরপেক্ষ দালিলিক তথ্য প্রমান ভিত্তিক তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।" ০৬। এ্যাডভোকেট অনিমেষ

রায়: ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অনিমেষ রায় বলেন- “তিনি ১৯৮৫ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি ফরিদপুর সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের জি এস

ডিপিসহ নির্বাচিত হওয়া ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অংগ সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন

করেছেন। দলের সংকটম মূহুর্তে সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত সরকারের

অত্যাচার মামলা মোকাবেলা করেছেন। অত্যাচারিত হয়েছেন তবুও দলের স্বার্থে সকল সংকটময় মূহুর্তে

সংগ্রাম করেছেন। এর পরে মানি- লন্ডারিং অপরাধে আমাকে অভিযুক্ত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ

তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। তিনি দীর্ঘদিন আইন পেশায় যুক্ত। তিনি অর্থ পাচার বা মানিলন্ডারিং এর কোন

প্রকার অপরাধের সাথে যুক্ত নন। এ মামলার এজাহারভূক্ত আসামী মোঃ সাজ্জান হোসেন বরকত ও মোঃ

ইমতিয়াজ সान রুবেল- ঐ মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আমার নাম বলেছে। আমি সম্পূর্ণ দালিলিক তথ্য-প্রমান ভিত্তিক নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।” ০৭। খন্দকার শাহীন আহমেদ: খন্দকার শাহীন আহমেদ একজন বিশিষ্ট পেশানার ঠিকাদার। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সরকারী আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কাফরুল থানায় আলোচিত মানিলন্ডারিং মামলায় মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার নাম বলা সম্পর্কে বলেন- “তাদের

সাথে আমার কোন ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। তাদের এ দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা।” তিনি নিরপেক্ষ ও প্রভামমুক্ত

তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের আবেদন জানান। তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন- “মানিলন্ডারিং

অপরাধ হয় এমন কোন কাজের সাথে তিনি যুক্ত নন বা কখনোই যুক্ত ছিলেন না।"

৩৮। মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাট্রি এর সাবেক প্রেসিডেন্ট, বিশিষ্ট

ব্যবসায়ী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন- “তিনি একজন পেশাদার ব্যবসায়ী। তার পিতা দীর্ঘ ৫০

বছর সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। পিতার ব্যবসার পাশাপাশি তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ঠিকাদারীসহ

বহুবিধ ব্যসার সাথে যুক্ত। তিনি একাধিকবার সেৱা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আয়কর বিবরণীতে তার আয়-ব্যয় ও অর্জিত সম্পদের যাবতীয় তথ্য সংযুক্ত করেছেন। যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সংরক্ষিত আছে। তিনি আলোচ্য মামলার আসামীদের সাথে কোন প্রকার অংশীদারিত্ব ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিলেন না। তিনি  মানিলন্ডারিং হতে পারে এমন অপরাধের সাথেও যুক্ত নন। তিনি এ বিষয়ে তথ্য ও দালিলিক প্রমানসহ

নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২, সংশোধিত ২০১৫

একই সাথে মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এর আইনে সুনিদৃষ্ট করে বলা হয়েছে কি কি অপরাধ করলে তা মানি

লন্ডারিং অপরাধ হিসেবে গন্য হবে। কেবলমাত্র সুনিদৃষ্ট তথ্য প্রমানের ভিত্তিতেই এ মামলা তদন্ত আসামী

চিহ্নিত ও বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি- বাংলাদেশ পুলিশ এর সিআইডি,

বিশিষ্ট আইনজীবি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর সাথে। সকলেই এই

ধরনের মামলার আসামী সনাক্তকরন ও বিচার কার্যক্রম নিয়ে মতামত দিয়েছেন। মানিলন্ডারিং মামলা

সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পুলিশ, সিআইডি প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া উইং এর অতিরিক্ত

পুলিশ মোঃ আজা

রহমান বলেন- “সিআইডি সব সময় নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত করে থাকে। সিআইডিতে সংশ্লিষ্ট তদন্ত

কর্মকর্তা তদন্তের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। তবে তদন্তকে আইন ও বিধি অনুযায়ী পরিচালনা করতে

উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ পরামর্শ দিতে পারে। মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত করতে

সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী উপযুক্ত তথ্য ও দালিলিক প্রমানের উপর ভিত্তি করেই আসামীকে

চিহ্নিত ও অভিযুক্ত করা হয়। " ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিনিয়র

এ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল্লাহ আবু এ প্রসঙ্গে বলেন- “মানিলন্ডারিং আইনে অপরাধী চিহ্নিত করতে প্রকৃত

অর্থেই সুনিদৃষ্ট আইনের মধ্যে দালিলিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতেই আসামী চিহ্নিত করতে হয়। এক্ষেত্রে

১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির চেয়ে আইনী তথ্য ও দালিলিক প্রমানই বেশী জরুরী। দালিলিক

তথ্য প্রমান ব্যতিত এ আইনে আসামী চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। আমি এক্ষেত্রে দালিলিক প্রমানকেই

সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি। মানিলন্ডারিং মামলায় আসামী চিহ্নিতকরন সম্পর্কে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের

বিজ্ঞ ডেপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল (ডিএজি) এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন- “মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ

আইন-২০১২ ও সংশোধিত ২০১৫ এর ২৫

ধারা একই সাথে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এর সকল ধারা ও উপধারায় বলা হয়েছে- কি কি

অপরাধ করলে কোন ব্যক্তিকে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আসামীর

বিরুদ্ধে তার অপরাধের সুনিদৃষ্ট দালিলিক প্রমান উপস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। বিচারিক আদালত ন্যায়

বিচারের স্বার্থে দালিলিক তথ্য প্রমানকেই সর্বাধিক গুরু দেয়। তবে ১৬৪ ধারার জবানবন্দির ভিত্তিতে

তদন্ত কর্মকর্তা যে কাউকেই সত্য উদ্ঘাটনের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে, কিন্তু বিচারিক পর্যায়ে

অভিযোগপত্র দাখিল করতে অবশ্যই তথ্য ও দালিলিক প্রমানের প্রয়োজন পড়বে। "

এ প্রসঙ্গে সুপ্রীমকোর্টের প্রবীন আইনজীবি, সংবিধান প্রনেতা ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম বলেন-

মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধী চিহ্নিত করতে উপযুক্ত দালিলিক তথ্য প্রমান ব্যতিত

অভিযোগপত্র দাখিল করা উচিত নয়। এই ক্ষেত্রে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির গুরুত্ব

কম। দালিলিক তথ্য প্রমানের উপর ভিত্তি করে অভিযোগপত্র দাখিল না করলে বিচারিক আদালতেই মামলা

খারিজ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার উচিত দালিলিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতেই

আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা।

ঢাকার কাফরুল থানায় দায়েরকৃত প্রায় ২০০০ কোটি টাকা পাচার সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং মামলার

এজাহারভুক্ত আসামী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যাদের নাম বলেছেন- তারা অনেকেই জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের আওয়ামী

লীগের নেতা ও ব্যবসায়ী। এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি করতে গিয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের

সভাপতি শামীম হক বলেন- “নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামীদের চিহ্নিত করার

দাবী জানাচ্ছি।" এক্ষেত্রে অপরাধে যুক্ত নন এমন কাউকে অভিযুক্ত না করতে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার

প্রতি আহবান জানান। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন- উপযুক্ত

দালিলিক তথ্য প্রমান ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করা হলে তিনি এই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা

বলবেন। তিনি এক্ষেত্রে উপযুক্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতেই আসামী চিহ্নিত করে আদালতে অভিযোগপত্র

দাখিল করতে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি আহবান জানান।

আরও খবর

Sponsered content

আরও খবর: অর্থনীতি

সিটির সঙ্গে একীভূত না করতে গভর্নরকে বেসিকের কর্মীদের স্মারকলিপি

ওসিডিএল এর নেতৃত্বে- নিরাপদ ও লাভজনক আবাসনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমিন সিটি পূর্বাচলের পথচলা শুরু হয়েছে

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে খেললে সরাসরি কারাগারে পাঠানো হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব এর দৃষ্টি আকর্ষণ : চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক-এর নাম প্রস্তাবে ব্যাপক অনিয়ম

এশিয়ান ক্যান্সার ইনস্টিটিউট বিডি প্রাইভেট লিমিটেড এবার কাজ করছেন মরণব্যাধি ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে

রিহ্যাব এর বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২০ || আবাসন ব্যবসায়ীদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছি – আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট