অন্যান্য

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বিধি-বিধান নিবিড়ভাবে অনুসন্ধান না করার ফলে অনেক নিরাপরাধ ব্যক্তি হয়রানীর আশংকা করছেন।

  অনক আলী হোসেন শাহিদী: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১০:৩৯:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালার সর্বশেষ আইন এবং আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীরা চিহিৃত হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে আইনের প্রতিটি বিধি নিবিড়ভাবে অনুসরন না করার ফলে অনেকেই উক্ত মামলায় কোন অপরাধ না করেও হয়রানী হওয়ার আশংকা করছেন। কেউ কেউ এ বিষয়ে ন্যায় বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অথবা সিআইডিতে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে ফরিদপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান একজন।

আমরা ফরিদপুরের বহুল আলোচিত ঢাকার কাফরুল থানায় ২০০০ কোটি টাকা পাচার সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং মামলার (মামলা নং-২৪ তাং- ২৬-০৬-২০২০ইং) বর্তমান অবস্থা ও বিগত ২০২১ সালের ২রা মার্চ আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র অনুসন্ধান করেছি (অভিযোগপত্র নং:৫৮ তাং: ০২-০৩-২০২১ইং)। উক্ত অনুসন্ধানে নানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে কথা বলেছি। ফরিদপুরের ঐ আলোচিত মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় সংশ্লিষ্ট আসামীরা অনেকের নাম বলেছেন বলে জানা যায়। যাদের নাম বলেছেন- তাদের মধ্যে একজন মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, তিনি পৈত্রিকভাবে একজন সনামধন্য ব্যবসায়ী। তিনি ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সাবেক প্রেসিডেন্ট।

ফরিদপুরের আলোচিত মানিলন্ডারিং মামলার অভিযুক্ত আসামীদের এর সাথে আপনার সম্পর্ক কি? কেন জনৈক আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় আপনার নাম বলেছেন? এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? এ প্রশ্নের উত্তরে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন- “আমি ফরিদপুরের একজন সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ব্যবসার কারনে অনেকের সাথে সু-সম্পর্ক আছে আবার কারও কারও সাথে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতাও আছে। সর্বোপরি স্থানীয় রাজনৈতিক কিছু কিছু ব্যাপারও জড়িত আছে। এ সমস্ত কারনে সুযোগ বুঝে কারও মাধ্যমে আমার সামাজিক মর্জাদা ও ব্যবসা-বাণিজ্য হানী করার উদ্দেশ্যে এহেন কাজ করতে পারে”। এ ব্যাপারে তিনি তার প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে সুনামের সাথে ব্যবসা করার এবং প্রতিষ্ঠান সমূহের নিয়মিত ট্যাক্স-ভ্যাটসহ বিভিন্ন কর পরিশোধের কাগজ-পত্রাদি উপস্থাপন করেন। এছাড়া সততার পুরষ্কার স্বরুপ ২ বার সেরা করদাতা হওয়ার সনদসহ বিভিন্ন সনদপত্র প্রদর্শন করেন। উপরোক্ত প্রশ্নের আলোকে তিনি এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দালিলিক তথ্য প্রমানাদি আমাদের দপ্তরে প্রেরন করেন। ঐ সকল তথ্য অনুসন্ধান করে জানা যায়- মোঃ সিদ্দিকুর রহমান এর বিরুদ্ধে ফরিদপুরের একটি প্রতিপক্ষ মহল কর্তৃক মিথ্যা মামলা দায়ের করলে তিনি ২০২১ সালের ১০ই ডিসেম্বর গ্রেফতার হন। তার অনুপস্থিতিতে ঐ সময়ে তার স্ত্রী মুসরীন আক্তার বিগত ২০২১ সালের ২০শে ডিসেম্বর সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে- কাফরুল থানা কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা নং: ২৪ তাং: ২৬-০৬-২০২০ইং তারিখের মামলায় সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার অভিযোগপত্রে আসামী হিসেবে তার

স্বামী মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের নাম না থাকা স্বত্বেও প্রতিপক্ষের অপরাজনীতির প্রভাবে পূনঃরায় উক্ত মামলায় আসামী বানানোর হুমকীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করে একটি আবেদনপত্র দাখিল করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক অধিশাখা-২ তার দপ্তরের স্মারক নং: ৪৪.০০.০০০০.০৭৫.০৬.০০২.২০২০.১০ তাং: ০৫-০১-২০২২ইং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শক, পুলিশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেন। উক্ত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পুলিশ মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মিরপুর জোন- তার দপ্তরের স্বারক নং: ৮৮৪ তাং: ২৮-০৮-২০২২ইং তারিখে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত প্রতিবেদনে জানান- কাফরুল থানায় মানিলন্ডারিং মামলা নং: ২৪ তাং: ২৬-০৬-২০২০ইং এর অভিযোগের সাথে মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্য প্রমান অনুসন্ধান করে জানা যায়- উক্ত মানিলন্ডারিং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডি, ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ^াস কর্তৃক সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২০২১ সালের ২রা মার্চ একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগ পত্র নং: ৫৮। দাখিলকৃত (চার্জশীট) অভিযোগপত্রটি অনুসন্ধান করে জানা যায়- উক্ত মামলার মানিলন্ডারিং অপরাধের সাথে মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। যদিও জনৈক আসামী উক্ত মামলায় মোঃ সিদ্দিকুর রহমান যুক্ত আছেন মর্মে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত ১৬৪ ধারার জবানবন্দি অনুসন্ধান করে মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তিনি তার দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে মোঃ সিদ্দিকুর রহমানকে অব্যাহতি দেন। উল্লেখ্য, মামলাটি পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, এস.এম মিরাজ আল মাহমুদ, পুলিশ পরিদর্শক, টিম নং-৩, ঢাকা মেট্টো-পশ্চিম বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ, সিআইডি, ঢাকা অনুসন্ধানী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর গত ২৬-০৬-২০২০ইং মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন/২১২ (সংশোধনী/২০১৫) এর ৪ (২) ধারা মোতাবেক অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থদ্বারা বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করার অপরাধে নিয়মিত মামলা করার নিমিত্ত্বে এজাহার দায়ের করেন। অত্র এজাহারে শুধুমাত্র সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল এর বিভিন্নভাবে অর্জিত অবৈধ সম্পদ অর্জনের বর্ননা আছে। অত্র মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার বিশ^াস, সহকারী পুলিশ সুপার, ঢাকা মেট্টো পশ্চিম, বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি দীর্ঘ তদন্তের পর ৪২ জনকে অব্যাহতি দিয়ে আসামী সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনকে আসামী করে গত ০২-০৩-২০২১ইং অভিযোগপত্র নং-৫৮ আদালতে দাখিল করেন। এখানে উল্লেখ্য, কতিপয় আসামী ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করলেও তদন্তকালে ঐ সকল প্রকাশিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন সমর্থনীয় স্বাক্ষ্য-প্রমান দ্বারা আসামীদের প্রদত্ত ১৬৪ ধারার বক্তব্য সমর্থিত না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত ব্যক্তিদের অব্যাহতি প্রদান করেন।

মামলাটি অনুসন্ধান করে আরো জানা যায়- তদন্ত কর্মকর্তা, সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার, ঢাকা মেট্টো পশ্চিম উত্তম কুমার বিশ^াস কর্তৃক দাখিলকৃত অভিযোগপত্রের মধ্যে কিছু বিষয় অসম্পূর্ণ থাকায়

মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ৬টি বিষয়ের উপর

অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত বিগত ২০২২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর ৩৫নং আদেশে বলেন-

ÒOn perusal of the record I find substance in the submission of the learned Assistant Public Prosecutor, This being the position, I am of the viwe that the investigating officer did not investigate the case properly.

Consequently, the prayer for further investigation is allowed and the case be withdrawn from trail for holding further investigation. To 13.10.2022 for further investigation report.

A copy of this order be sent to the Additional IGP, CID, Malibagh, Dhaka for information and necessary action.Ó

মামলাটি বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম এর অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান তদন্ত করছেন।

উক্ত মামলার বিষয়ে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্য থেকে জানা যায়- উক্ত তদন্তে তিনি ন্যায় বিচার পেতে বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডির অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শকের সমীপে চলতি বছরের ১৬ই জানুয়ারী একটি আবেদন করেন। ঐ আবেদনে তিনি মানিলন্ডারিং অপরাধের কোন ধারায়ই অপরাধ করেননি মর্মে দাবী জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী জানিয়েছেন।

পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন যে- মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২, সংশোধিত ২০১৫ সনের ২৫নং আইন ও সর্বশেষ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা ২০১৯ এর সকল ধারায় সুষ্ঠু ও ইতিবাচক প্রয়োগের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহিৃত করা সম্ভব। এই আইনটি বার বার সংশোধিত হয়েছে রাষ্ট্রের আর্থিক সু-শৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করার স্বার্থে। এ ক্ষেত্রে আইনের প্রতিটি ধারার তথ্য সমৃদ্ধ প্রয়োগ মানিলন্ডারিং অপরাধের সাথে যুক্ত প্রকৃত অপরাধীদের চিহিৃত করতে সক্ষম হবে।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালায় নিরপেক্ষ ও তথ্য সমৃদ্ধ প্রয়োগ সম্পর্কেই প্রকৃত অপরাধীদের চিহিৃত করা সম্ভব কিনা? এমন বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি- ঢাকা জেলা দায়রা জর্জ আদালতের বিজ্ঞ অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এর সাথে। তিনি বলেন- “সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত ও দালিলিক প্রমানের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং অপরাধের সাথে যুক্ত প্রকৃত অপরাধী চিহিৃত করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত তথ্য ও উপাত্তের সাথে দালিলিক প্রমানকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।” এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবি এস এম শাহজাহান বলেন- “মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালায় মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই ক্ষেত্রে দালিলিক তথ্য প্রমান ব্যতিত অপরাধী চিহিৃত করা সম্ভম নয়। কারন আদালত উক্ত মামলায় দালিলিক তথ্য প্রমানপত্রকেই বিচারের বিষয়বস্তু মনে করেন।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের বিজ্ঞ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন- “মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও সংশোধিত ২০১৫ এর ২৫ ধারা একই সাথে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এর সকল ধারা উপাধারায় বলা হয়েছে- কি কি অপরাধ করলে কোন ব্যক্তিকে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত করা যাবে।

এ ক্ষেত্রে আসামীর বিরুদ্ধে তার অপরাধের সুনির্দিষ্ট দালিলিক প্রমান উপস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। বিচারিক আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে দালিলিক তথ্য প্রমানকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। তবে, ১৬৪ ধারার জবানবন্দির ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা যে কাউকেই সত্য উদঘাটনের সার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে, কিন্তু মামলার বিচারিক পর্যায়ে তথ্য ও দালিলিক প্রমানই ন্যায় বিচার নির্ধারন করে।” মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এবং সংশোধিত ২০১৫ একই সাথে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। এ মামলার প্রকৃত অপরাধীদের চিহিৃত করার বিষয়ে আমরা কথা বলেছি- সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের সাথে। তিনি বলেন- “আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই কাজ করছি। প্রকৃত অপরাধীদের চিহিৃত করতে সকল দালিলিক তথ্য প্রমান সংগ্রহ করে তা যাচাই-বাছাই করেই প্রকৃত অপরাধীদের চিহিৃত করি। এ ক্ষেত্রে সিআইডিতে ডিআইজির নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। উক্ত কমিটি মানিলন্ডারিং এর সাথে যুক্ত অপরাধীদের চিহিৃত করতে সকল তথ্য উপাত্ত ও সংগ্রহকৃত দালিলিক প্রমান যাচাই-বাছাই করেই আদালতে উপস্থাপন করে। তিনি বলেন- ১৬৪ ধারার জবানবন্দির ভিত্তিতে প্রকৃত অপরাধী চিহিৃত করতে যে কাউকেই জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ আইনে রয়েছে।” এ আইনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) মোঃ খায়রুল আলম শেখ বলেন- “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তার নিয়ন্ত্রনাধীন আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠান দালিলিক প্রমানের ভিত্তিতেই মানিলন্ডারিং এর সাথে যুক্ত অপরাধীদের চিহিৃত করে থাকে।”

দেশে সুশৃঙ্খল অর্থনৈতিক পরিবেশ, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করে- “মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে জাতীয় সমন্বয় কমিটি”। বিদ্যমান আইনে দেশের অর্থমন্ত্রী এ কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর প্রধান কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিব। আমরা এই আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ প্রসঙ্গে কথা বলেছি- বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর প্রধান কর্মকর্তা মোঃ মাছুদ বিশ^াসের সাথে। তিনি বলেন- “মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২, সশোধিত ২০১৫ একই সাথে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এ বলা আছে- মানিলন্ডারিং এর ক্ষেত্রে কি কি আইন ও বিধি ভঙ্গ করলে অপরাধ হয়। আমরা নিজেরা কোন মামলা করি না। মানিলন্ডারিং এর বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন পর্যায় থেকে অভিযোগ পেলে আমরা তার তদন্ত করে দালিলিক প্রমানের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সহযোগিতা করি। এ বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিধি রয়েছে। আমরা উক্ত কর্ম পরিধির আলোকেই আমাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকি।”

ইতোমধ্যে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধিমালার বিষয়ে এ প্রতিবেদনে বিজ্ঞ জনদের সাথে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট মানিলন্ডারিং আইনে অপরাধের ধরন বিবেচনায় শুধুমাত্র দালিলিক প্রমানের ভিত্তিতেই প্রকৃত অপরাধী সনাক্ত করা সম্ভব। বিজ্ঞ বিচারকের সম্মুখে ১৬৪ ধারায় আসামীর দেয়া জবানবন্দির সত্যতা যাচাইয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও দালিলিক প্রমানের প্রয়োজন পড়ে। কারন বিচারিক আদালত সুনির্দিষ্ট তথ্য ও দালিলিক প্রমানের ভিত্তিতেই মামলা সমূহের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করে।

 

 

 

 

আরও খবর

Sponsered content