অন্যান্য

পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, গোপালগঞ্জের আর্থ সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে

  অনক আলী হোসেন শাহিদী ২১ জানুয়ারি ২০২৩ , ৯:১৮:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মূলত দেশের প্রত্যন্ত ও অবহেলিত অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান-উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন উন্নয়ন হাতে নিয়ে থাকে। এসব প্রকল্পের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের নাম “গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প”।
গোপালগঞ্জ জেলার গণমানুষের জীবনযাত্রাকে সমৃদ্ধ করতেই মূলত গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে। এ জেলার সাধারন মানুষের জীবনযাত্রায় মূলত কি কি সমস্যা রয়েছে তা চিহ্নিত করে সমস্যার ইতিবাচক সমাধানে এ প্রকল্পটির আওতায় বিভিন্ন নির্মাণ কাজের মধ্যে রয়েছে ৩৫.০৩ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক বিসি দ্বারা উন্নয়ন, ৫৮৩ মিটার উপজেলা সড়কে ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ। গোপালগঞ্জ জেলার বৌলতলী জিসি-ঘোনা পাড়া-ফুকরা আর এইচ ডি সড়কে ২০০ মিটার ব্রীজ নির্মাণ, প্রায় ৯৫ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক বিসি দ্বারা উন্নয়ন, প্রায় ৩৪ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক এইচ বিসি দ্বারা উন্নয়ন, প্রায় ১০৩২ মিটার ইউনিয়ন সড়কে ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ, প্রায় ৪৪২ কিলোমিটার গ্রাম সড়কে বিসি দ্বারা উন্নয়ন, প্রায় ৫০২ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক এইচবিবি দ্বারা উন্নয়ন। এছাড়া গোপালগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম সড়কে প্রায় ৬৭০০ মিটার ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ।


গোপালগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি এর অফিস সম্প্রসারন, বাসভবন বাউন্ডারীওয়াল পূনঃনির্মাণ, গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৪টি গ্রোথ সেন্টার ও গ্রামীন হাট-বাজার উন্নয়ন, ৭২টি বোট ল্যান্ডিং ও ঘাটলা নির্মাণ, প্রায় ৪১ কিলোমিটার খাল পূনঃখনন, ১৯৭১ সালের ৫টি ম্যুরাল নির্মাণ, প্রায় ৬১ কিলোমিটার সড়ক রক্ষনাবেক্ষন ও পূনর্বাসন। একই সাথে প্রকল্পটির অধীনে জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় ১টি খাল পূনঃখনন, স্লোপ প্রটেকশন ও পাড় উন্নয়ন, প্রায় ৭৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরন, কোটালীপাড়া উপজেলা কমপ্লেক্স, লেক পূনঃখনন, স্লোপ প্রটেকশন, পাড় উন্নয়ন
ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ ও মধুমতি নদীর পাটগাতি লঞ্চঘাটে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট ল্যান্ডিং ঘাটলা নির্মান।
গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। পরবর্তীতে প্রকল্পটি প্রথমবার সংশোধন করে ২০২২ সাল এর মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তী প্রকল্পের কাজের গুনগত মান ও বাস্তবায়ন বিবেচনা করে প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ২০২৪ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের উন্নয়ন কাজে ২০১৬ সালে ব্যয় ধরা হয় ৬১৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। পরবর্তীতে প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১৮ সালে ব্যয় ধরা হয় ১৮২৩ কোটি টাকা এবং ২০২২ সালে ব্যয় ধরা হয় ১৮২৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর প্রকল্পটির ৫০০ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। এ কাজের সম্পূর্ণ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা হয়তো সম্ভব হবে।


গোপালগঞ্জ জেলার পল্লী উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন প্রকৌশলী মোঃ আবু ছায়েদ। তিনি এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ ও প্রকৃতির সাথে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। কর্মজীবনের নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তিনি এই সর্ম্পক স্থাপন করেছেন। ফলে প্রকল্পের সকল কার্যক্রম বাস্তবায়নে তিনি গভীরভাবে আশাবাদী। এ প্রসঙ্গে এই প্রতিনিধিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন- “একটি প্রকল্পের কাজ যখন সুচারুরূপে শেষ হয় তখন আমি মানসিকভাবে শান্তি পাই। মানসিক শান্তি ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে এ কার্যক্রমকে অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। সময়মত বরাদ্দ পেলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে আপ্রান চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।”


গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের উন্নয়ন নিয়ে আমি কথা বলেছি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপির সাথে। তিনি এ প্রকল্প সম্পর্কে বলেন- “হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় জন্মভূমি গোপালগঞ্জ আমাদের হৃদয়ের পূণ্যময় ভূমি। এ অঞ্চলের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে এ মন্ত্রণালয় সবসময়ই গুরুত্বের সাথে কাজ করছে। এ প্রকল্পের এ উন্নয়নে আমি গভীর সন্তোষ প্রকাশ করছি।”

আরও খবর

Sponsered content