অনলাইন ডেস্ক ৯ জানুয়ারি ২০২৩ , ৩:২৩:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
শীত শুরু হওয়ার পর থেকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হলেও অসাধু পাখি শিকারি ও গাছপালা কমে যাওয়ায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে আগের মত পাখি আসছে না। সংরক্ষিত এই হাওরের নীতিমালা অনুযায়ী হাওরে ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচলে নিষেধ থাকলেও অবাদে চলছে। তাই অভয়াশ্রম হিসেবে খ্যাত এই হাওরে দিন দিন কমে যাচ্ছে অতিথি পাখির সংখ্যা। সুনামগঞ্জ জেলার হাওরাঞ্চল তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত শীতে এক রকম বর্ষায় আরেক রকম। প্রতি শীতে এই হাওরে আসে অন্তত দুইশ প্রজাতির অতিথি পাখি। শীত প্রধান দেশ সাইবেরিয়া,চীন,মঙ্গোলিয়া ,নেপাল সহ আরও অনেক দেশ থেকে আসে এসব অতিথি পাখি। কিন্তু এ হাওর জলাশয়ে আগেরমত পাখি আসে না। মাছও আগের মত উৎপন্ন হয় না। রামসার নীতিমালানুযায়ী হাওরের ভেতর ইঞ্জিত চালিত নৌকার প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু এসব নিষেদ এর তোয়াক্কা না করেই অবাধে চলছে ইঞ্জিন চালিত নৌকা। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই হাওরের মধ্যে জাল ব্যবহার করে চলছে মৎস্য ও পাখি নিধন। তাহিরপুর উপজেলার সোলেমানপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল খয়ের বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরে আমরা ছোটবেলা দেখতাম পাখি আর পাখি। এখন চোর আর অসাধু পাখি শিকারির লাগি ওখন আর অতিথি পাখি আয় না আগের মত। হাওর পাড়ের আরেক বাসিন্দা সবুজ মিয়া বলেন, ‘এই হাওরটা সংরক্ষিত। এখানে ইঞ্জিত চালিত নৌকা চলাচল নিষেদ। কিন্তু অবাদে ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে পর্যটকরা ঘুরাফেরা করছে। এজন্য ইঞ্জিনের শব্ধে অতিথি পাখিরা ভয়ে পালিয়ে যায় অন্য হাওরে। শীতের তীব্রতা থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে নানা প্রজাতির এসব অতিথি পাখি আসে দেশের হাতেগোনা কয়েকটি জায়গায়। সেখানে তারা গড়ে তোলে ক্ষণস্থায়ী আবাস। তার মধ্যে টাঙ্গুয়ার হাওর অন্যতম। পানকৌড়ি, বেগুনি কালেম, ডাহুক, বালিহাঁস, গাঙচিল, বক, সারস, কাক, শঙ্খচিল, পাতিকুটসহ নানা প্রজাতির পাখির নিয়মিত বিচরণ এই হাওরে। হাওরে পাখি শিকার নিষিদ্ধ। সার্বক্ষণিক একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার বাহিনী যৌথভাবে পাহারা দেওয়া সত্ত্বেও তেমন কোনো সুফল লক্ষ করা যাচ্ছে না। কিছু অসাধু লোকজনের কারণে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে শিকার করা হচ্ছে অতিথি পাখি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, ‘কেউ যাতে টাঙ্গুয়ার হাওরের পাখি শিকার করতে না পারে সেজন্য ভ্রাম্যমান আদালত নিয়মিত পারিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে, সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১৮ মৌজায়, ৫১টি জলমহালের সমন্বয়ে নয় হাজার ৭২৭ হেক্টর অঞ্চল নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর গড়ে উঠেছে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলাভূমি। বর্ষাকালে হাওরটির আয়তন দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার একর।