অন্যান্য

বিজয় দিবসের বিশেষ সাক্ষাৎকার- দেশের আর্থ সামাজিক মুক্তি ও সকল সংকটে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অব্যাহত অগ্রনী ভূমিকাকে স্বাগত জানাই।

  অনক আলী হোসেন শাহিদীঃ ৪ জানুয়ারি ২০২৩ , ৪:২২:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রস্তাবিত বেঙ্গল বিশ^বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট আইনজীবি ও সমাজ হিতৈসী ব্যক্তিত্ব ডঃ সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহ্উদ্দিন বলেছেন- “মহান বিজয় দিবস আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গভীর আত্মত্যাগ সর্বস্তরের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের এক অনন্য বিজয়। এ বিজয় অর্জিত হয়েছে ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয় অর্জনের মাধ্যমে। এ কারনে এ দিনটি আজ আমরা স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধা ভরে। সেদিন পাকিস্থানী শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে একদল বীর সৈনিকরা দেশ মাতৃতার বিজয় অর্জন করেছে। দেশের সকল স্তরের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে শামিল করেছিল। সেদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের মহান সেনাবাহিনীর অগ্রনী ভূমিকার কারনেই আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ।” ডঃ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহ্উদ্দিন মহান বিজয় দিবসের বিশেষ সাক্ষাৎকারে আরো বলেন- “এ দেশের সেনাবাহিনী দেশের সকল সংকটময় মুহুর্তে গণমানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছে একান্ত বন্ধুর মতো। বন্যা, দূর্যোগ ও মহামারীতে দেশ-প্রেমিক সেনাবাহিনীর ভূমিকা শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করছি। আগামীতে দেশের যে কোন সংকটে দেশের সেনাবাহিনী থাকবে গণমানুষের পাশে এই প্রত্যাশাই করছি।” তিনি বলেন- “বিজয়ের এই দীর্ঘ সময়ে আমরা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে অনেকটা সাফল্য অর্জন করলেও আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনৈতিক মুক্তি, খাদ্য নিরাপত্তাসহ গণমানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সর্বাগ্রে দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বির্নিমাণ করতে হবে। এ জন্য সর্বাগ্নে প্রয়োজন অবাধ ও নিরপেক্ষ গণতন্ত্রের চর্চা। এই অবাধ ও নিরপেক্ষ গণতন্ত্রের চর্চার জন্যই মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সেই গণতন্ত্র আজ কতটা মুক্ত তা ভাবার সময় এসেছে।” তিনি বলেন- “গণতন্ত্র মূলত মুক্তিকামী মানুষের কথা বলে। দেশের মহান সংবিধান মানুষকে কথা বলার অধিকার দিয়েছে। মিছিল মিটিং ও শান্তিপূর্ন সমাবেশসহ ভোটাধিকার প্রয়োগে অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছে। মহান সংবিধানের সেই আলোকে রাজনৈতিক দলের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া সংঘার্ষিক।” এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন- “নিবন্ধিত দল নয়, রাজনৈতিক সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ। এটাই সংবিধানিক প্রক্রিয়া। এটাই গণতন্ত্রের চর্চা।” তিনি বলেন- “এদেশে অনেকবার সেনাশাসন এসেছে কিন্তু সর্বশেষে মানুষ গণতন্ত্রের আদর্শকেই বেছে নিয়েছে।” ডঃ জাভেদ এদেশের বীর সেনাবাহিনীর কথা পূর্নব্যক্ত করে বলেন- “সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের একটি মৌলিক নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। সেনাবাহিনীকে দেশের জনকল্যানে কাজে লাগাতে হবে। একই সাথে তাদেরকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। অতীতে তারা এদেশে অনেক সফল কাজের স্বাক্ষর রেখেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অন্যতম। এটি জনগনের মৌলিক পরিচয় নিশ্চিত করেছে। এদেশের সেনাবাহিনী বিশে^র শান্তিরক্ষী মিশনে অনন্য ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে এর সম্প্রসারনে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।” মহান বিজয় দিবস স্মরনে ডঃ জাভেদ দেশের গণতন্ত্র চর্চা প্রসঙ্গে বলেন- “গণতন্ত্রের চর্চা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগ্রাম ছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই ছিল গণতন্ত্রের মূল মন্ত্র। সেই জন্যে আজ সকল দল ও মতের উর্দ্ধে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গণতন্ত্রের বিজয় অর্জন প্রয়োজন। গণতন্ত্রে মত-পার্থক্য থাকবে। সেই মত-পার্থক্যই গণতন্ত্রের মাধ্যমে একটি সুশাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব।” উল্লেখ্য যে, ডঃ সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহ্উদ্দিন একজন বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সন্তান। তার বাবা বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা, প্রখ্যাত পার্লামেন্টারিয়ান মরহুম ব্যারিষ্টার সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ সালেহ্উদ্দিন। মরহুম ব্যারিষ্টার সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ সালেহ্উদ্দিন ছিলেন একজন অনন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনের ভাষা সৈনিক, গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, পাকিস্থান জাতীয় পরিষদের সদস্য। তার বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, কর্ম ও রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে ব্যারিষ্টার সালেহ্উদ্দিন জীবন ও রাজনীতি নামে এ বছর একটি বিরল ঐতিহাসিক বই প্রকাশিত হয়েছে। বইটি লিখেছেন- বিশিষ্ট লেখক মঈন উদ্দিন আহ্মেদ। বইটি প্রকাশ করেছে সাহিত্য বিকাশ। প্রকাশক জনাব ফজলুর রহমান। বইটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দলিল। এই বইয়ের মাধ্যমে আজকের নতুন প্রজন্ম অনেক অজানা ইতিহাস জানতে পারবে। বাবার জীবন ইতিহাসের এই বই সম্পর্কে ডঃ জাভেদ বলেন- “এই বইটি আমার মরহুম পিতার সাথে নতুন প্রজন্মের অনন্য সেতু বন্ধন রচনা করবে।”

 

আরও খবর

Sponsered content